একটা খাতা আর কলম নিয়ে চোখ বন্ধ করে নিজের নামটা লিখতে চেষ্টা করে দেখুন তো অন্ধকারে একটি ছোট্ট কাজ ঠিকমত করতে কেমন লাগে…
আমাদের সবার দৃষ্টিশক্তি আছে, তবু একটু আঁধারেই আমরা কেমন ভয় পেয়ে যাই…অথচ যারা এই অক্ষমতা নিয়েও আলো জ্বালাবার চেষ্টা করে যাচ্ছেন নিয়ত, তাদের কী বলা যায়…?
হ্যাঁ তারা আলো জ্বালাতে চায়, কিন্তু তার জন্য একটুখানি বিদ্যুৎশক্তি প্রয়োজন, যে শক্তিটা আপনি নিজে…!
সামনেই এইচ.এস.সি পরীক্ষা, আমাদের ভাই-বোন বা পরিচিত অনেকেই হয়ত পরীক্ষা দেবে, অনেক ভালো রেজাল্ট করবে, আর আমরা তাদের রেজাল্টে অনেক খুশি হব, চারদিকে মিষ্টির বন্যা বইবে! তাই না? কিন্তু আমাদের আরও কিছু ভাই-বোন আছে যারাও কিনা এইবার এইচ.এস.সি পরীক্ষা দিতে চায়(!!), “চায়” লিখলাম কেননা এখনও ওদের পরীক্ষা দেওয়া নিশ্চিত হয়নি, কিন্তু এখন পর্যন্ত তাদের জন্য কোন শ্রুতিলেখক পাওয়া যায় নি…শিক্ষা বোর্ডে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব শ্রুতিলেখকদের নাম জমা দিতে হবে।
হ্যাঁ, আমি বেগম বদরুন্নেসা কলেজের সেই ৫ জন দৃষ্টিশক্তিহীন শিক্ষার্থীর কথা বলছি; মিতু, ইয়াসমিন, রুমা, প্রতিমা, মুন্নী। এতগুলো বছর এত প্রতিকূলতা, ঝড়-ঝঞ্ঝা, সমাজের অবজ্ঞা উপেক্ষা করে আজ তারা আরেকটি জয়ের দ্বারপ্রান্তে; এমন সময় তাদের দরকার একটু সহানুভূতি, আমাদের একটু সাহায্য, খুবই সামান্য একটু সাহায্য, আমরা কি পারি না ওদের বিজয়ের সাথী হতে? কেমন লাগবে আমাদের যদি সামান্য শ্রুতিলেখকের অভাবে ওদের এতদিনের লালিত স্বপ্নটা নষ্ট হয়ে যায়? মেনে নিতে পারবো আমরা? তাই আসুন ওদের স্বপ্নে তুলির শেষ আঁচড়টা আমরাই দিই।
আমাদের সাহায্য ছাড়া ওদের জীবন থেমে যাবে, তা নয়। কিন্তু মানুষের মত বাঁচার অধিকার থেকে বঞ্চিত হবে!

ছবির মেয়েটিকে দেখুন, অন্ধত্ব তার মনোবল কেঁড়ে নিতে পারেনি। আজন্ম অন্ধকারকে সঙ্গী করেই এগিয়ে চলছে আলোর সন্ধানে। শুধু ও একা নয়, আমাদের আশে পাশেই হয়তো আছে এমন আরো অনেক অদম্য মেধাবীরা। আমরা কি পারি আমাদের সময় থেকে কিছু সময় ওদের জন্য ব্যয় করতে?
কলেজের ফার্স্ট ইয়ার বা তার নিচের ক্লাসে পড়ুয়া আপনি, আপনার কোন ছোট ভাই-বোন যে কেউ চাইলেই তাদের জন্য একটুখানি বিদ্যুৎশক্তির যোগান দিতে পারেন…তারা আলো জ্বালাতে চায়, শিক্ষার আলো…খোঁজ নিয়ে দেখুন না আশেপাশে, যদি তাদের চলার পথে আলো জ্বালাতে একটু সাহায্য করতে পারেন, সেটাওতো অনেক বড়, তাইনা…? শিখতে ওদের কোন দ্বিধা নেই … জানতে ওদের কোন অনাগ্রহ নেই… কাজ করতে ওদের কোন অনীহা নেই, শুধু যদি ওদের কাছে গিয়ে বলা যায়: শোন,আমি তোমার চোখ হব !!
কীভাবে সাহায্য করা যাবে:
- কলেজের প্রথম বর্ষ, এই শিক্ষা বছরের (SSC’12) মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীরা (যেহেতু এপ্রিলে তাদের ছুটি থাকবে) বা তার নিচের ক্লাসে পড়ুয়া (নবম বা দশম শ্রেনী হলে ভালো হয়) ছাত্র বা ছাত্রী, এবং তাকে বাংলা মাধ্যমের হতে হবে। HSC পরীক্ষা চলাকালীন সময়ে পরীক্ষার সময় গুলোতে দৃষ্টিউ-প্রতিবন্ধী পরীক্ষার্থীদের সাথে যেতে হবে এবং তাদের বলা উত্তর গুলো শুনে শুনে লিখে দিতে হবে। পরীক্ষার খাতার আনুষঙ্গিক তথ্যগুলো পূরণ করতে হবে।
- আগ্রহী স্বেচ্ছাসেবকদের ২ কপি ছবি সহ নিজ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রত্যয়ণ পত্র দিতে হবে। এটা রাইটার পারমিশন নিতে বোর্ড এ দিতে হয়। এ কাজটি পরীক্ষার্থীদের পক্ষ থেকেই করা হবে।
- প্রয়োজনে শ্রুতিলেখক দের যাতায়াত খরচ বহন করা হবে কমিউনিটিঅ্যাকশন’এর পক্ষ হতে, দানশীল ব্যক্তিগন’দের সাহায্যে।
- বদরুন্নেসা কলেজের পরীক্ষার কেন্দ্র হবে খুব সম্ভবত ঢাকা কলেজ কিংবা কবি নজরুল ইসলাম কলেজ।
- যারা ওদের চোখের আলো হয়ে ওদের এই সরু রাস্তাটি পার করে দিতে চান, অনুগ্রহ করে যোগাযোগ করুন (01713547317 -রিদওয়ান হোসেন অক্ষর, 01911394647 – হাসান তারেক আকাশ)এই নম্বরে। অথবা মেইল করুনঃ <team@ca-bd.org>

ওদের এই হাসিমুখ কখনো যেন মলিন না হয়! তাই আমরা দাঁড়াতে চাই ওদের পাশে, আপনি কি দাঁড়াবেন আমাদের পাশে?
Achcha ami sylhet e thaki,Ami ki Sahajjo korte pari?
আপনার আন্তরিক সদিচ্ছার জন্য অনেক ধন্যবাদ। আপাতত শেয়ার করুন পোস্ট টি, পরিচিত ছাত্র/ছাত্রীদের জানাতে পারেন :)
Jodhi Dhaka te Ashte Pari obossoi
আমি ভাবছিলাম শ্রুতিলেখকদের সাহায্য পাওয়া গেছে , আশা করি খুব তাড়াতাড়ি ব্যবস্থা হবে ৷ আমার অনেক অনেক শুভ কামনা থাকলো ..
ইনশাল্লাহ ব্যবস্থা হয়ে যাবে, আমরা সাধ্যমত চেষ্টা করছি, দোয়া করবেন আপু।
tomdrk amr onk onk salam. .r jara ai kaje egiye asbe tadr proti amr roilo repect of sea. .
ধন্যবাদ ভাইয়া, দোয়া করবেন সবসময় :)
অবিশ্বাস্য একটি পরিস্থিতি কল্পনা করুন. . .
ধরুন আপনি এইচ.এস.সি পরীক্ষা দেবেন, সারা বছর কষ্ট করে প্রিপারেশন নিয়েছেন। এমন সময় শুনলেন বোর্ড থেকে নিয়ম জারি করা হয়েছে, পুরো পরীক্ষা ‘ব্রেইল’ পদ্ধতিতে দিতে হবে!!!! (ব্রেইল হল দৃষ্টি প্রতিবন্ধীদের পড়াশোনার পদ্ধতি, http://en.wikipedia.org/wiki/Braille )
আপনার রিঅ্যাকশন কী হবে? “আমি সুস্থ সবল মানুষ, আমি ব্রেইলে পরীক্ষা দিব ক্যান????? মগের মুল্লুক নাকি????” — মেজাজ খারাপ হওয়াটাই স্বাভাবিক! তবুও ধরে নিন কোন এক কারণে আপনার সামনে কোন অপশন দেয়া হল না, এভাবেই পরীক্ষা দিতে হবে। তো পড়িমরি করে আপনি ব্রেইল জানা কোন একজনকে খুঁজে বের করার চেষ্টা করলেন, যাতে করে আপনি বলবেন আর সে সেটা পরীক্ষার খাতায় লিখে দেবে – এভাবে পরীক্ষাটা অন্তত অ্যাটেন্ড করতে পারেন। আপনার ক্যারিয়ারের প্রশ্ন। আপনাকে পরনির্ভরশীল হতে *বাধ্য* করা হল।
কিন্তু হায়!! দরকারের সময়ে এরকম কাউকেই পেলেন না আপনি; যাঁরা সাহায্য করতে পারতেন, তাঁরা সময় দিতে পারছেন না।
গেল!! আপনার সব কষ্টের প্রিপারেশন জলে গেল!!! খুব অভিমান হবে, তাইনা? সিস্টেমটার প্রতি? জীবনের প্রতি?
এই ঘটনা সত্যি সত্যিই আপনার জীবনে ঘটে গেলে কেমন হত? অবিশ্বাস্য কল্পকাহিনী মনে হচ্ছে?
বিশ্বাস করুন আর নাই করুন, ঠিক এরকম পরিস্থিতির মুখোমুখি কিছু মানুষের কথা বলতেই লিখছি। বদরুন্নেসা কলেজের পাঁচজন দৃষ্টি প্রতিবন্ধী আপু মিতু, ইয়াসমিন, রুমা, প্রতিমা ও মুন্নী। এতগুলো বছর এত প্রতিকূলতা, ঝড়-ঝঞ্ঝা, সমাজের অবজ্ঞা উপেক্ষা করে তাঁরা এগিয়ে চলেছেন সমাজের যোগ্য সদস্য হিসেবে নিজেদের গড়ে তোলার জন্য। আমাদের দেশে দৃষ্টি প্রতিবন্ধীদের জন্য ব্রেইল পদ্ধতিতে ছাপা বই তো দূরের কথা, টেক্সট বইগুলোর সামান্য ভয়েস রেকর্ডিংও বলতে গেলে নেই! তবুও তাঁরা পড়াশোনা চালিয়ে গিয়েছেন, এবারে এইচ.এস.সি. পরীক্ষা দেয়ার প্রিপারেশন নিয়েছেন।
কিন্তু দরিদ্র এই দেশে দৃষ্টি প্রতিবন্ধীদের জন্য পরীক্ষা দেবার বিশেষ ব্যবস্থা নেই। দিতে হবে শ্রুতিলেখকদের সাহায্য নিয়ে; উনারা উত্তর বলবেন আর ‘রাইটার’রা সেটা খাতায় লিখে দেবেন। পরনির্ভরশীল হতে *বাধ্য* করা হয়েছে।
তাহলে, উনাদের স্বাভাবিক রিঅ্যাকশন কী হওয়া উচিত? “. . .মগের মুল্লুক নাকি????” –মেজাজ খারাপ হওয়াটাই কি স্বাভাবিক নয়?? হাতে কোন অপশন নেই, উনাদের এখন ‘রাইটার’ দরকার। কিন্তু, যাঁরা কাজটা করতে পারতেন, তাঁরা সময় দিতে পারছেন না। এখনও পাঁচজনের রাইটার পাওয়া যায়নি।
দুটো সিচুয়েশনের মাঝে মিলটা কি তুলে ধরতে পারলাম? এই পাঁচ আপুর পরীক্ষার জন্য *জরুরি* ভিত্তিতে শ্রুতিলেখক প্রয়োজন!!
আমি নিশ্চিত, ভয় পাওয়ার কিছু নেই। আপুদের সাহায্যে এগিয়ে আসবেন, এরকম মানুষ আমরা খুঁজে পাবই ইনশাল্লাহ :) এই পুরো প্রক্রিয়াটির দায়িত্ব CommunityAction পালন করছে, সাথে প্রয়োজন আপনাকেই!!