স্বাধীনতা দিবসের প্রাণশক্তিকে অ্যাকশনিয়াররা চেষ্টা করেন গঠনমূলক কাজে পরিণত করতে! ২০১১ তে শুরু হয়েছিল Action: Essence of Shadhinota ইভেন্ট, যেখানে দলবদ্ধভাবে সেবামূলক কাজের মধ্য দিয়েই স্বাধীনতার স্পিরিটটাকে বাস্তবে রূপদান করেছেন অ্যাকশনিয়াররা। ২০১৪ সালের টিমগুলোর গল্প লিখছি আজ!
অ্যাকশনিয়াররা দুটো টিমে কাজ করেছিলেন গত বছর, টিমঃ সুহৃদ আর টিমঃ বর্ণিল স্বাধীনতা! টিমঃ সুহৃদের অ্যাসাইনমেন্ট ছিল অটিস্টিক বাচ্চাদের জন্য শিক্ষার উপকরণ তৈরি করা। শ্যামলীর Society for the Welfare of Autistic Children (SWAC) স্কুলের সাথে কাজ করেন এই টিমের সদস্যরা। সেখানে শিক্ষকদের সাথে কথা বলে ও নিজেরা চিন্তাভাবনা করে দলটির সদস্যরা তিনটি বিশেষ গেম ডিজাইন করে।
অটিস্টিক বাচ্চাদের অনেক ক্ষেত্রে সংখ্যা/বর্ণ চিনতে বেগ পেতে হয়, গবেষণায় দেখা গিয়েছে প্রথাগত শিক্ষার বদলে কোন খেলা/ছবি/অ্যাকটিভিটির মাধ্যমে শেখালে বাচ্চারা দ্রুত এগুলো শিখে নিতে পারে! প্রথম গেমটি ছিল The Circular Board Game– পাঁচ থেকে দশ বছর বয়সী বাচ্চাদের সংখ্যা চেনাতে সাহায্য করবে গেমটি। শিক্ষক একটি সংখ্যা বলবেন, বাচ্চারা বোর্ডের উপরের তীরটি ঘুরিয়ে সেই সংখ্যাটিকে নির্দেশ করবে! :D
দ্বিতীয় গেমটি ছিল “The Matching Card Board Game”– সংখ্যা এবং বস্তু মেলাতে শিখানোর জন্য। দুই ধরণের কার্ড থাকবে, এক টাইপের কার্ডে বিভিন্ন সংখ্যা লেখা, আরেক টাইপের কার্ডে বিভিন্ন সংখ্যক বস্তুর ছবি আঁকা। শিক্ষক যেকোন টাইপের কার্ড বোর্ডে ঝুলিয়ে দেবেন, বাচ্চারা সেই হুকগুলোতে অন্য টাইপের কার্ড ঝুলাবে সংখ্যা মিলিয়ে! :D শিক্ষক যদি ‘৩’ লেখা কার্ড ঝুলান, বাচ্চারা তিনটি আপেলের ছবি আঁকা কার্ড তার উপর ঝুলাবে!
তৃতীয় গেমটি ছিল “The Train Game”– ট্রেনটি প্রতিবার ঘোরার সময় কিছু বর্ণ এবং সংখ্যা বহন করে নেবে, ম্যাগনেটে ট্রেনের গায়ে লাগানো থাকবে সেগুলো। তারপর শিক্ষক জিজ্ঞেস করে দেখবেন বাচ্চারা মনে করতে পারছে কিনা ঠিক কোন বর্ণ গিয়েছে! খেলা শেষে বর্ণগুলো খুলে বাচ্চাদের দেয়া হবে লেখা প্র্যাকটিস করার জন্য! :D
টিমঃ বর্ণিল স্বাধীনতা কাজ করেছিল মিরপুরের Baptist Mission Integrated School এর সাথে, দৃষ্টি প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীদের সাথে জমজমাট আয়োজনে! এই টিমটি স্কুলের বাচ্চাদের সাথে fun & learn ইভেন্টের আয়োজন করে,
যাতে শিক্ষার্থীরা গান পরিবেশন করে, খেলাধুলা করে ও প্রাণবন্ত সময় কাটায়! এই ইভেন্টে একই সাথে ফান্ডরেইজিং এরও আয়োজন করা হয়, যার লক্ষ্য ছিল স্কুলটি ফান্ডিং এর দীর্ঘমেয়াদী সমাধানের দিকে এগুনো। একই সাথে, প্রয়োজনের ভিত্তিতে শিক্ষার্থীদের স্পন্সর করার কনসেপ্টটিও ডোনারদের কাছে সফলভাবে তুলে ধরা হয়। সোশ্যাল মিডিয়াতে টিমটি একটি সচেতনতামূলক ইভেন্টও আয়োজন করে।
এই অ্যাসাইনমেন্টগুলোর লক্ষ্য ছিল, অ্যাকশনিয়ারদের দক্ষতা, সময়জ্ঞান বৃদ্ধি, সীমিত বাজেটে সমাধান চিন্তা করতে শেখা, প্রফেশনাল রিপোর্ট সাবমিট করা, একটি দলের সাথে কাজ করতে শেখা, সহমর্মিতা ও সচেতনতা গড়ে তোলা! ২৬ মার্চ ওয়ার্কশপে এই অ্যাসাইনমেন্টের প্রয়োজনীয় স্কিলস বিষয়ে প্রশিক্ষিত করে তোলা হয় পার্টিসিপেন্টদেরকে। দিনশেষে, যোগ্য ও চিন্তাশীল নাগরিকেরাই তো দেশের জন্য অমূল্য সম্পদ হয়ে গড়ে উঠবেন, তাইনা? :D