অ্যাকশনঃ হাম্বা’র জন্য গরু কেনা হবে শুনে বেশ এক্সাইটেড ছিলাম! অ্যাকশনটির দায়িত্বে ছিল রাব্বি, ওর সাথে কথা বলে ঠিক হল ২২ তারিখ আমরা আগারগাঁও হাটে যাব গরু কিনতে। বিকাল ৪টায় সেখানে গিয়ে দেখি এ বছর সরকার আগারগাঁও-এ আদৌ হাট বসারই অনুমোদন দেয়নি :S কী আর করা, আমি আর রাব্বি মোহাম্মদপুরের বছিলার হাটের উদ্দেশ্যে রওনা হলাম।
অতঃপর হাটে গিয়ে দেখা গেল একটিও ইন্ডিয়ান গরু নেই, সব দেশি গরু! যার ফলে গরুর বেপারীরা দেশি গরুর দাম বাড়িয়ে দিয়েছে ২ থেকে ৩ গুন, একটা বাছুর সমান গরুর দামও চাচ্ছে ৪৫-৫৫ হাজার টাকা। এদিকে আমাদের বাজেটই ছিল ৩০ হাজার। এই দামের মধ্যে কোন গরু পাই না! :( আমি রাব্বিকে বললাম, “আজকে মনে হয় গরু পাব না। আরও একদিন দেখা লাগবে। আজকে কেউ দাম ছাড়তে চাচ্ছে না।” রাব্বি বলল, “আমারও তাই মনে হচ্ছে :/ তবে আরেকটু দেখি।”
ঘোরাঘুরির এক পর্যায়ে একটি ছোটখাট লাল রঙের গরু দেখিয়ে রাব্বি আমাকে বলল, আচ্ছা এই গরুটা দেখ তো, দেখে তো মনে হচ্ছে সুস্থ গরু– হাড় দেখা যাচ্ছে, কোন রকম ইঞ্জেকশন দেয়ার কথা নয়। গরুর বেপারীর কাছে দাম জিজ্ঞেস করলে সে চাইল ২৮ হাজার। অবশেষে দামাদামি করে ২৫,৫০০ টাকায় গরুটি আমাদের দিয়ে দিল :D
হাসিল পর্ব শেষে আমরা ধানমণ্ডির উদ্দেশ্যে রওনা হলাম। এরপরই ঘটতে থাকে একের পর এক মজার কাহিনী। রাস্তায় দেখি অন্য এক গরু হাত থেকে ছুটে গেছে, সেই গরু এদিক ওদিক দৌড়ে বেড়াচ্ছে, কেউ ধরতে পারছে না! এরপর আমাদের গরুটা আবার আমার স্যান্ডালের উপর পাড়া দিয়ে বসল, স্যান্ডেলটা গেল ছিঁড়ে :P কী আর করা, মোহাম্মদপুর থেকে ধানমণ্ডি পর্যন্ত শেষমেশ খালি পায়েই হেঁটে আসলাম! আমি গরুর দড়িটা খুব শক্ত ভাবে ধরে রেখেছিলাম যাতে কোনভাবেই সে রাস্তার মানুষকে গুঁতো দিতে না পারে :P
অবশেষে ছোটখাট একটা বিশ্বযুদ্ধ শেষে আমরা গরু কিনতে সফল হলাম :D গরুটি পরবর্তীতে মিরপুরে মেয়েদের একটি এতিমখানায় পৌঁছানোর ব্যবস্থা করা হয় কোরবানির উদ্দেশ্যে। এভাবে অ্যাকশনঃ হাম্বার ঢাকা পর্ব সফল ভাবে শেষ হল! :D